মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ - ১৬:২৭
হাজ শেইখ: "আমি ইরান যাচ্ছি, ইসলাম ও মুসলমানদের সেবা করতে"

আয়াতুল্লাহ শেইখ আব্দুল করিম হায়েরি, কুমের হাওজা ইলমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং মির্জা শিরাজির ছাত্র, ইসলামী শিক্ষার ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নাম।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আমি ( জামালদ্দিন হাশেমি গোলপায়েগানি) সমর্রাতে হা শেইখ আব্দুল করিমের সঙ্গে ছিলাম যখন তিনি ইরানে যেতে চাইছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, “আপনি তো মির্জা শিরাজির পর অন্যতম বিখ্যাত আলেমদের একজন, কেন আপনি ইরানে যেতে চাইছেন?”
তিনি বললেন: “আমি মর্জা (শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা) হতে চাই না, আমি ইরান যেতে চাই, যদি সম্ভব হয় তবে ইসলাম ও মুসলমানদের কিছু সেবা করতে চাই।”

আয়াতুল্লাহ শেইখ আব্দুল করিম হায়েরি, কুমের হাওজা ইলমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং মির্জা শিরাজির ছাত্র, ইসলামী শিক্ষার ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি শুধু একজন ফকীহ ও নৈতিক আলেমই ছিলেন না, বরং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সুদূরদর্শিতার অধিকারীও ছিলেন।

প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন:

আয়াতুল্লাহ মির্জা শিরাজি

আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ তাকি শিরাজি

আয়াতুল্লাহ মির্জা ইব্রাহিম মাহালাতি

আয়াতুল্লাহ শেইখ ফজলুল্লাহ নূরী

আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ মোহাম্মদ ফেশারকি

আয়াতুল্লাহ মোল্লা মোহাম্মদ কাসেম খোরাসানি


শেইখ আব্দুল করিম শুধু ফিকহই শেখেননি, বরং সমকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন, ইরানে ধর্ম ও আলেম সমাজের প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়েছে, বস্তুবাদী ও বিভ্রান্তি ছড়ানো মতাদর্শ শক্তি পাচ্ছে।

শেইখের পরিকল্পনা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠন ও ধর্মীয় পুনর্জাগরণ

এই চিন্তাধারা থেকেই তিনি মির্জা শিরাজির দ্বিতীয় উত্তরসূরির আহ্বান সত্ত্বেও ইরাক ফিরে যাননি, বরং ইরানেই থেকে যান।
তিনি শহর এরাক-এ একটি হাওযা ইলমিয়া প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত হয়।

কুমে হাওজা প্রতিষ্ঠা ও মির্জার আদর্শ বাস্তবায়ন

পরে তিনি কুমে হিজরত করেন এবং সেখানে হাওযা ইলমিয়া প্রতিষ্ঠা করে মির্জা শিরাজির “মাদরাসা নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার” আদর্শ অনুসরণ করেন।
তার এই প্রচেষ্টায় ইরান, ইরাক ও ভারতজুড়ে মুকাল্লিদ (অনুসরণকারী) তৈরি হয়।

সারসংক্ষেপে:
যেমনভাবে ফজলুল্লাহ নূরী “ঔপনিবেশিক বিরোধিতা”-তে, এবং মোহাকক নাঈনি “রাজনৈতিক চেতনা”-তে মির্জার প্রভাব বহন করেছিলেন, তেমনি শেইখ আব্দুল করিম মির্জার “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠন ও মাদরাসা ব্যবস্থাপনার” ভাবধারাকে অনুসরণ করেছিলেন। তাঁর কীর্তি আজও কুম ও এরাকের সমৃদ্ধ হাওযা ইলমিয়াতে জীবন্ত।

উৎস: আয়িনে দারানে হাকিকাত, খণ্ড ২৭, ২০০৩

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha